পরিবহন নেতাদের উদ্দেশ্যে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যথার্থই বলেছেন, ‘এভাবে চলতে পারে না।’ কিন্তু চলছে তো! মন্ত্রীর আসনে থেকে তিনি যতই অভিমান করুন, ক্ষোভ প্রকাশ করুন, লক্কড়-ঝক্কড় বাসকে লজ্জা বলে কথার ফানুস রচনা করুণ- তাকে কী অবস্থার কিছুমাত্র হেরফের হবে? হবে না। এর দায় সরকারের, আরও পরিষ্কার করে বললে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের।
এ ক্ষেত্রে পরিবহন নেতাদের দুষলে চলবে না। আর ‘শাজাহান ভাইর’ দিকে তাকিয়ে মন্ত্রীর কাঁতর আহাজারির তো কোনোই উপযোগ নেই! তাছাড়া তিনি সমাধান নেতাদের কাছে চাইবেন কেন? তার বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, জুজুর ভয় দেখিয়ে ভারত বিরোধিতার কার্যকারিতা যেমন অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে তেমনই এর ওর দিকে তাকিয়ে চাতক পাখি হয়ে শিবের গীতের কোনো উপযোগ এখন আর নেই। এ বাস্তবতায় সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর উল্লিখিত কথামালা মানুষ আসলে গ্রহণ করেনি। বরং বিরক্ত হয়েছে।
এদিকে সড়ক পরিবহন নিয়ে শিবের গীত কেবল সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। এ কাতারে শামিল হয়েছেন, পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি ২৯ মার্চ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের কাছ থেকে গণপরিবহন বা ট্রেনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের মাধ্যমে হয়রানির চেষ্টা করলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ অথবা সংশ্লিষ্ট থানায় ফোন করে সহায়তা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রায় শেষ প্রান্তে থাকা আইজিপি। এসময় তিনি যাত্রীদের প্রতিও কিছু নসিয়ত করেছেন। কিন্তু তাকে কে প্রশ্ন করবে, বাড়তি ভাড়া কোনটি? তা কে নির্ধারণ করবে?
এ প্রসঙ্গে সাবেক মন্ত্রী বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান ১ এপ্রিল যে বক্তব্য দিয়েছেন তা নিশ্চয়ই পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন শুনেছেন। শাজাহান খান বলেছেন, বাস মালিকরা সারাবছর যাত্রীদের যে ডিসকাউন্ট দেন সে কারণেই ঈদের সময় বাসভাড়া বাড়ান। বিভিন্ন সময় পাঁচশ টাকা ভাড়া হলে হয়ত একশ টাকা ডিসকাউন্ট সারা বছর চলে। ঢাকা থেকে যাচ্ছে, সেই গাড়িটা কিন্তু ফাঁকা আসছে। সেখানে অনেক সময় তারা ভাড়া কিছুটা বাড়ায়, তাও খুব বেশি না। ডাবল নেয় না। আমরাও চাই ভাড়া বাড়ুক। তিনি বলেন, বিমানের ভাড়া বাড়ছে নাকি কমেছে? বিমান কি যানবাহন না? অবশ্যই বিমান গণপরিবহন। এদিকে, আকাশে সড়কের প্রবনতা দেখাগেছে এবার। ঈদে বিমানের ভাড়া বেড়েছে তিনগুণ। আরাজতগা আর কাকে বলে!
# ঢাকাটাইমস-এ প্রকাশিত, ১০ এপ্রিল ২০২৪। শিরোনাম, ‘মন্ত্রীর আহাজারি এবং পুলিশপ্রধানের হুঁশিয়ারি’