কাদের ভাই না পাল্টানোর বিষয়ে অনেক ঘটনা আমার স্মৃতিতে আছে। একটি বলি। গত মেয়াদের প্রথম দিকে সুপারসনিক গতিতে চলছে সরকার। কাদের ভাই যোগাযোগমন্ত্রী। তার অফিসে গেলাম। তিনি ব্রিফ করছেন, অফিস কক্ষ সাংবাদিকে ভরপুর। আমি স্বভাবসুলভ প্রবণতায় কোনো রকম পেছনের দিকে গিয়ে দাঁড়ালাম। বসার মতো চেয়ার বা সোফা তো দূরের কথা, চেয়ারের কোনা-কানচিও ফাঁকা ছিল না।
ব্রিফ শেষ হওয়ার পরও অনেক সাংবাদিক রয়ে গেছেন। চা-বিস্কুট আর খাজুরে আলাপ। তবে ভিড় অনেকটা কমেছে। এদিকে আমি পেছনেই দাঁড়ানো। এ সময় মনে হলো কাদের ভাই হাতের ইশারায় ডাকছেন। কিন্তু কনফিউশন ছিল। এ সময় কাঞ্চন কুমার দে বললেন, ‘কী ব্যাপার ভাই! কাদের ভাই ডাকে তো আপনাকে, দেখেন না?’ বুঝলাম আমার ধারণা সঠিক। কাছে গেলাম। কাদের ভাই বললেন, কোথায় আছো এখন? বললাম, কোথাও না, বেকার। তিনি বললেন, চলো কীভাবে? বললাম, খ্যাপ মাইরা চলি! তিনি সবাইকে শুনিয়ে বললেন, শোন আলম রায়হান কী বলে, খ্যাপ মাইরা চলে! এর পর একটু নিচু গলায় বললেন, ‘তুমি মাঝেমধ্যে আইসো।’
মন্ত্রী কাদের ভাইর পরামর্শ রাখিনি। যেমন এর আগে ‘মাঝেমধ্যে আসার’ জন্য এক সচিব বন্ধুর পরামর্শও আমলে নেইনি। এই বন্ধুটি ডাকসাইটে সচিব ছিলেন। মন্ত্রী কাদের ভাই এবং ওই বন্ধু সচিবের প্রতি আমার বিশেষ ধরনের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আছে। এরপরও সাম্প্রতিক ঘটনায় কাদের ভাইর ওপর প্রচণ্ড রাগ না করে আর পারছি না! সড়কে লাশের মিছিল কাহাতক আর সহ্য করা যায়! লাশের মিছিলের কল্পনায় যেন নিজেকে খুঁজি! অসহ্য মনে হয়। আরো অসহ্য লাগে যোগাযোগমন্ত্রীর চেয়ারে বসে কাদের ভাই যখন মালিকদের অনুনয়-বিনয় করেন। বৈঠকে ‘শাজাহান ভাই’ বলে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। একই বৈঠকে আবার কথা বলেন যাত্রাগানের বিবেকের মতো। এ কারণে আমি তার ওপর প্রচণ্ড বিরক্ত। আরো বিরক্ত নানান উন্নয়নের নামে দেশে পানির সর্বনাশের ধারায়। মুখরোচক এই উন্নয়নে নানান কুফল আছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে নৌ-পথ সংকুচিত হয়ে সড়কের ওপর চাপ সীমা ছাড়ানো।
# ঢাকাটাইমস-এ প্রকাশিত ২২ এপ্রিল ২০২৪, শিরোনাম: ‘কাদের ভাইকে উৎসর্গ করলাম আমার লাশ’