কক্সবাজারে তরুণীর মুখ এসিড নিক্ষেপ

দখিনের সময় ডেস্ক ।।

কক্সবাজারের রামুতে এক তরুণীর মুখে ‘এসিড ছুড়ে’ ঝলছে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। জানা যায়, প্রতিবেশীর তামাক ক্ষেতে দিনমজুরি বাবদ পাওনা টাকা দাবি করাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের জেরে বিয়ের মাত্র তিনদিন আগে এসিড দিয়ে ঝলছে দিয়ে হয় তার চেহারা। এ ঘটনায় জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ভোরে উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের মাঝিরকাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী তরুণী তৈয়বা বেগম (২২) মোজাফ্ফর আহমদের মেয়ে। বর্তমানে তিনি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

তরুণীর মুখের ডান পাশে প্রায় পাঁচ শতাংশ ঝলসে গেছে। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে কী ধরনের দাহ্য পদার্থ দিয়ে তরুণীকে ঝলসে দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে কিছু জানাতে রাজি হননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

ভুক্তভোগী পরিবারের বলেন, তিন মাস আগে তৈয়বা বেগমের ছোট ভাই আজিজ মওলা প্রতিবেশী বাদশা মিয়ার তামাক ক্ষেতে দিনমজুর কাটে। ফলে মজুরি বাবদ কিছু টাকা পাওনা ছিল আজিজ। এ নিয়ে বাদশা মিয়ার ছেলে নুরুল আবছারের সঙ্গে আজিজ মওলার মতবিরোধের সৃষ্টি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নুরুল আবছার লোকজন নিয়ে মাস দু’য়েক আগে তৈয়বাদের বাড়িতে হামলা চালায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, হামালার ঘটনায় মামলা দায়ের করার প্রচেষ্টায় দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ আরও বেড়ে যায়। এরইমধ্যে আগামী শুক্রবার পাশের গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে সামাজিকভাবে তৈয়বার বিয়ের দিন ঠিক হয়। এতে পূর্ব বিরোধের জেরে তৈয়বার বিয়ে ভাঙতে চেষ্টা চালায় নুরুল আবছার। একপর্যায়ে সে এসিড ছুড়ে মারে।

ভুক্তভোগী তরুণীর মা নূর আয়েশা বলেন, আগামী শুক্রবার পাশের গ্রাম জাউচের এক যুবকের সঙ্গে তৈয়বার বিয়ের দিন ধার্য ছিল। খবরটি জানার পর প্রতিপক্ষ নুরুল আবছার হবু বরের বাড়িতে গিয়ে তৈয়বার নামে নানা ধরনের কুৎসা রটায়। এতে কাজ না হলে নুরুল আবছার তৈয়বার বিয়ে ভাঙতে বিভিন্ন স্থানে প্রচার চালায়। তবুও সফল না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে আবছার এসিড ছুড়ে মারে।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার ভোরে ঘরের বাহিরে বাথরুম যাওয়া জন্য বের হয়। এ সময় আগে থেকে ওতপেতে থাকা নুরুল আবছার ও অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তৈয়বাকে লক্ষ্য করে এসিড ছুড়ে মারে। এতে তৈয়বার বাম পাশের মুখমণ্ডল ঝলসে যায়। আঘাতের কারণের বাম চোখ থেকে পানি ঝরছে।

ঘটনার পরই তৈয়বার চিৎকারে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে বলেও জানান নূর আয়েশা।

এদিকে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে তরুণীকে দেখতে কক্সবাজার সদর হাপসাতালে যান কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান। এ সময় তিনি তরুণীর মা ও ভাইদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন।

পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, আমরা বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। তরুণীর স্বজনদের দেওয়া তথ্যে জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটক করতে অভিযান চলছে।