মামুন-অর-রশিদ ॥
বরিশালের কীর্তনখোলায় মৌসুমের রেকর্ড জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় তলিয়ে গেছে নগরীর মধ্য ও নিম্নাঞ্চল। প্রতিদিনই বাড়ছে পানির উচ্চতা আর প্লাবিত বরিশাল নগরীর নতুন নতুন এলাকা। ডুবে গেছে পাড়া-মহল্লার রাস্তাঘাট। বাসা বাড়িতেও ঢুকে পড়েছে পানি। এমনকি বরিশাল সদর রোডের অধিকাংশ এলাকা থৈ থৈ করছে পানিতে।
বরিশাল স্টেডিয়াম কলোনির বাসিন্দা ফারজানা মুন জানান, বাড়িঘরে থাকার উপায় নেই। রান্না-বান্না সব চৌকির ওপরই করতে হচ্ছে। তারা কলোনিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করলেও গত বিশ বছরেও জলমগ্ন হয়ে পড়ার এমন অবস্থা আগে কখনো দেখেননি।
বরিশাল পাউবোর গেজ রিডার আবু রহমান জানান, কীর্তনখোলায় রেকর্ড ৪৫ সেন্টিমিটার পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা এ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সর্বশেষ গত জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ৩০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। বর্তমানে নদীর পানি বিপদসীমার ৩ মিটারে অবস্থান করছে, যা স্বাভাবিক অবস্থায় থাকার কথা ছিল ২.৫৫ মিটার। পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে বরিশাল বিভাগের অন্যান্য নদ-নদীতেও।
গত চার দিনে অস্বাভাবিক জোয়ারে প্রমত্তা মেঘনা বেষ্টিত হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। তাছাড়া অবিরাম বৃষ্টিতে কঁচা ও বলেশ্বর নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী ৯ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপকূলীয় পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়নের পদ্মা নদীর ভাঙন এলাকার বেড়িবাঁধের ৫টি পয়েন্ট ভেঙে ১০ গ্রামে প্লাবিত হয়েছে। বরগুনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুসারে, অতিবর্ষণ ও অমাবস্যার প্রভাবে এ জেলায় ৪৫০ সেন্টিমিটারের ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে উপকূলীয় এলাকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে বসবাসরত মানুষের ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।