স্টাফ রিপোর্টার:
করোনা মহামারী শুরু হবার বহু আগেই রাজধানী ঢাকা ও বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন শহরে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব চরমে পৌছেছে। বাস্তব জ্ঞাণবর্জিত এক দল ‘কুকুর প্রেমির’ কারণে বহু বছরধরে নিধনের মাধ্যমে রাস্তার কুকুর নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া বন্ধ ছিলো। সম্প্রতি এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে খোদ রাজধানীর দুই সিটির দুই রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে করোনা মহামাররি ছাপিয়ে আলোচনায় এসেছে কুকুর।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একটি সমীক্ষার পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে রাস্তার কুকুরের সংখ্যা প্রায় ৩০ কোটি। আর এর প্রায় সবটা রয়েছে উন্নয়নশীল ও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোতে। কুকুরকে মানুষ ভয় পায়, প্রায়ই ককুরে কামড়ে আক্রান্ত হয জলাতংক রোগে। যাদের বেশির ভাগই শিশু।
রাজধানীতে কুকুর বেড়েছে অনেক। মানুষ কুকুরের জ্বালায় অতিষ্ঠ। এ অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকা থেকে কুকুর অপসারণ শুরু করেছে। অচেতন করে কুকুরগুলোকে ফেলা হচ্ছে মাতুয়াইলের ময়লার ভাগাড়ে। এদিকে কুকুর নিয়ে রাজধানী ঢাকার দুই সিটির দুই সিদ্ধান্ত।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কুকুর অপসারণ শুরু করলেও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন সে পথে হাঁটছে না। কোন কুকুর অপসারণ বা স্থানান্তর করতে চান না ডিএনসিসি মেয়র। বন্ধ্যাত্বকরণের মাধ্যমেই কুকুর নিয়ন্ত্রণ করতে চান তিনি। কুকুর নিয়ে নিজের ইচ্ছের কথা জানালেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, কুকুরগুলোকে বন্ধ্যাত্ব করবো এরপর এগুলোকে জ্বলাতঙ্কের ভ্যাকসিন দিব।
এদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে কুকুর নিধন, অপসারণ বা স্থানান্তর করে সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং জলাতঙ্কমুক্ত করা সম্ভব নয়। পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান স্থপতি রাকিবুল হক এমিল জানান, অপসারণ করে হয়তোবা সাময়িকভাবে অভিযোগকারী যারা আছেন তাদেরকে সন্তুষ্ট করা যায়। কিন্তু সুদুর প্রসারীভাবে আমি দেখি যদি, তাহলে সেখানে আবার কুকুরগুলো ফেরত চলে আসতে পারে। অথবা অন্য এলাকা থেকে আবার কুকুর চলে আসবে। সেখানে বন্ধ্যান্তকরণ হচ্ছে একটি কার্যকর পদ্ধতি।
ইতিহাস বলছে, আমাদের (আদিম মানব ও আধুনিক মানুষ) সঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার বছরের সম্পর্ক কুকুরের। বিবর্তনের পথে নেকড়ে থেকে বিশেষ একটি শাখা বেরিয়ে এসে কুকুর হওয়ার প্রায় পরপরই। নেকড়ে থেকে কুকুর এসেছে মানুষের হাত ধরেই। মানে, মানুষই নেকড়েদের কোনো না কোনো ভাবে পোষ মানিয়ে কুকুর তৈরি করেছে।