Home সারাদেশ হিজাব পরে স্কুলে আসায় ১৮ ছাত্রীকে পেটালেন সহকারী প্রধান শিক্ষিকা

হিজাব পরে স্কুলে আসায় ১৮ ছাত্রীকে পেটালেন সহকারী প্রধান শিক্ষিকা

দখিনের সময় ডেস্ক

নওগাঁর মহাদেবপুরে দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে হিজাব পরে আসায় ১৮ ছাত্রীকে গাছের ডাল দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে সহকারী প্রধান শিক্ষিকা আমোদিনী পালের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিক্ষা অফিসার ও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার জাতীয় সংগীত চলাকালীন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষিকা হিজাব পরিধান করা ছাত্রীদের চরম অপমান ও মারধর, অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং স্কুলে হিজাব না পরে স্কুলে আসতে বলেন। হিজাব পরে স্কুলে আসায় প্রায় ১৮ জন ছাত্রীকে মারধর করেন। তার নির্দেশে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অষ্টম শ্রেণির তিন ছাত্রীকে মারধর করেন।

হিজাব পড়ার কারণে নির্যাতনের শিকার ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আফরিন অভিযোগ করে জানায়, শিক্ষিকা তাদেরকে জানিয়ে দেন যে, ‘স্কুলে কোন পর্দা চলবে না। ঢং করে আসচো। বাসায় গিয়ে বোরখা পড়ে থাকো। যখন তোমরা মহাদেবপুর বাজারে যাবে তখন পর্দা করবে। স্কুলে আসলে মাথার কাপড় ফেলে আসবে।’ তিনি ছাত্রীদের হিজাব খুলে ফেলার জন্য টানাটানি করেন। এমনকি যারা হিজাব ছাড়া শুধু মাস্ক পড়ে এসেছিল তাদের মাস্কও খুলে দেন।  জাতীয় সঙ্গীতের পর লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা আমোদিনী পাল কেন হিজাব পরে স্কুলে এসেছে, এ কথা জিজ্ঞেস করে ইউক্যালিপটাস গাছের ডাল দিয়ে তাদের প্রহার করেন। বেশ কয়েকটি আঘাত করেন। তিনি হুমকি দেন, কাল থেকে যদি হিজাব ও মাস্ক পরে আসো তাহলে পিটিয়ে তোমাদের পিঠের চামড়া তুলে নেওয়া হবে। সাদিয়া আরো জানায়, লাইনের কয়েকজন ছাত্রীকে মারতে মারতে তার কাছে এসে তাকে মারতে থাকলে গাছের ডালটি ভেঙে যায়। অন্যদের মধ্যে দশম শ্রেণির ছাত্রী তিথি, লাকি, ঐশী, সুমাইয়া ও নবম শ্রেণির মোনাসহ কয়েকজন ছাত্রীকে পেটানো হয়। এক পর্যায়ে আমোদিনী পাল ছাত্রীদের মারধরের জন্য স্কুলের অপর শিক্ষক বদিউল আলমকে নির্দেশ দেন। তার নির্দেশে বদিউল আলমও তাদের প্রহার করেন বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রীরা।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ হিজাব পরে আসার কারণেই মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ওই শিক্ষিকাকে শোকজ করা হবে। অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে মোবাইল করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর তিনি কথা না বলে লাইনটি কেটে দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান গ্ণমাধ্যমকে জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

শিবিরের ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা শিগগিরই: শিবির সভাপতি

দখিনের সময় ডেস্ক ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, দু-একদিনের মধ্যে সেক্রেটারিসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। গতকাল শনিবার রাতে গণমাধ্যমকে...

সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান গ্রেপ্তার

দখিনের সময় ডেস্ক সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরীকে রাজধানীর আদাবর থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রবিবার রাজধানীর...

শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার

দখিনের সময় ডেস্ক: কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপে বাড়ির সামনে থেকে তাহমিনা আক্তারের (৭) নামে এক শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাত...

স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, থানায় এসে স্বামীর আত্মসমর্পণ

দখিনের সময় ডেস্ক: রাজধানীর পল্লবীতে শামসুন্নাহার (৫২) নামের এক নারীকে নিজ হাতে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তার স্বামী। ঘাতক স্বামীর নাম মোখলেছুর রহমান (৫২)।...

Recent Comments