দখিনের সময় ডেক্স ॥
আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনার কারণে গ্রামগঞ্জে গরু কিংবা মহিষ দিয়ে হালচাষ এখন আর তেমন একটা দেখা যায় না। ফলে সকালবেলা কাঁধে লাঙ্গল, জোয়াল, দড়ি আর সঙ্গে জোড়া গরু কিংবা মহিষ নিয়ে কৃষককে মাঠে যেতেও দেখা যায় না। তারপরও বাংলার এই ঐতিহ্য ধরে রেখে এখনো অনেকে নিজের ও পরিবারের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করছেন। আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে না পারলেও কৌশলগত দিক থেকে গরু-মহিষের চাষ করেও এখনো রোজগার করে চলছেন কেউ কেউ। হালের লাঙ্গলের চাষ এখন তেমন একটা নেই বললেই চলে। তবে এতে মূল জাতীয় চাষ ভালো হতো। যদিও আধুনিক কৃষি ব্যবস্থায় বিভিন্ন যন্ত্রের ব্যবহারে কৃষকের ফসল উৎপাদনের ব্যয় কমে, লক্ষমাত্রা আগের থেকে অনেকে বেড়েছে।
বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের সারসী এলাকার বাসিন্দা খলিল রহমান খান। যিনি সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চললেও এখনো দুটি মহিষ দিয়ে হালচাষের কাজটি করেন। স্থানীয়ভাবে আধুনিক যন্ত্র ট্রাক্টরের ব্যাপক চাহিদা থাকার পরেও মহিষ দিয়ে অন্যের জমি হালচাষ করে ভালো আয়-রোজগারও করছেন তিনি। আর যা রোজগার হচ্ছে তা নিয়ে তিনি সন্তুষ্টও। তিনি জানান, গোটা সারসী এলাকায় তার কদর আলাদা। সবাই যেখানে ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করছেন সেখানে তিনি তার নিজের দুটো মহিষ দিয়ে হালচাষ করেও এ বাজারে টিকে রয়েছেন।
বর্ষা ও ধুলাট উভয় সময়ের চাষেই তিনি কাজ পেয়ে থাকেন। কিছু কারণে কৃষক তার জমিতে মহিষ দিয়ে হালচাষ করান বলে জানিয়ে তিনি বলেন, এখানকার কৃষকদের জমিগুলো ছোট ছোট এটাই প্রধান কারণ গরু ও মহিষ দিয়ে হালচাষ করার। কারণ ছোট ছোট জমি ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে পোষায় না। আবার ছোট জমির কারণে আবাদের সময় হেরফের হলে অন্যের জমি ব্যবহার করে ট্রাক্টর আসতেও পারে না। এতে আবাদবিহীন জমিতে ট্রাক্টর নিয়ে আসতে হলে আবাদ করা জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। সে সময় চার পা ওয়ালা এই প্রাণীটিই ফসলবিহীন জমির হালচাষ করার প্রধান হাতিয়ার।